অসাধারন একটা মুভি গ্রুপ। প্রায় সব ইউজাররা একটিভ। নিয়মিত তারা বিভিন্ন মুভি শেয়ার করে হেল্প করছে পাশাপাশি হেল্প নিচ্ছে। চলছে আলোচনা। চলছে তর্ক। সবাই গ্রুপের নিয়ম মেনে গ্রুপ্টাকে নিজের মতো ভালোবেসেছে। যা আমাদের যারা মুভি দেখি তাদের জন্য কতো প্রয়জনিয় তা বলার বাইরে। আপনি চাইলেই এই গ্রুপের সদস্য হতে পারেন। আপনিও আপনার পছন্দের মুভিটি শেয়ার করতে পারেন। জেনে নিতে পারেন অন্যদের ভালোলাগার মুভি। আলোচনা করতে পারেন।চ শুধু এক্টিভ থাকার চেস্টা করবেন।গ্রুপের নিয়মকানুন মেনে চলুন। মুভি লাভার এখানে কিল্ক করে আমাদের প্রিয় গ্রুপের সদস্য হয়ে যান

সপ্ন মৃত্যু ভালোবাসা।

হালকা আলো জ্বলছে। ২ টা লাইট। একটা নিভানো। ফ্যান ঘুরছে। শো শো শব্দ করে। ফ্যানের ছায়া পড়ছে দেয়ালে। দুটো বেড আর দুটো সোফা। এই হলো বর্নিত স্থান।
রাত প্রায় ২ টা...
পি জি হসপিটাল ঢাকা।
২০৯ নম্বর রুমে আমি। চোখ সামনে। রোগির বেডে। শুয়ে আছে। পরিবর্তিত।অচেনা মানুষ। সারা শরির হলুদ হয়ে রয়েছে। পেট ফুলে গেছে। এখনি ফেটে যাবে।কান্সার আক্রান্ত।লিভার...।
আমি আর তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। পাশে বসা মেয়েটা তাকিয়ে আছে। নির্বাক। চোখে যেন এসিড। লাল, ছপ ছপ, ভেজা ভেজা।
মেয়েটা আমার দিকে তাকালো, আমি মুখ ঘুরিয়ে নিলাম। মেয়েটা পাশের বেডে তাকালো। দুজন মহিলা শুয়ে আছে। একজন আমার মা। ঘুমাচ্ছে, ঘুমাক, সারাদিন প্রচুর খেটেছে রোগির পিছনে।
মেয়েটা গুন গুন করে কি যেন বলছে।
/////////////////////////////////////////////////////////////
ডাক্তার ঢুকলো। চেক করলো। বলল পাশের রুমেই নার্স আছে, দরকার পড়লেই ডাক দিতে। আর যাওয়ার আগে বলে গেলো, রোগির বিশেষ কোনো পরিবর্তন দেখলে সাথে সাথে তাকে খবর দিতে।
মেয়েটা বলল, আমিতো এখনি বিশাল পরিবর্ত্ন দেখতে পাচ্ছি। ডাক্তার একটু হেসে মেয়েটার মাথায় হাত বোলাল। আর বলল, টেনশন কখনো ডিসিশন দেয়না। ছো বি কুল।
আর আমাকে একটা বুকে ঘুসি দিল।

...........................।।
মেয়েটা লাইট অফ করে দিল। আমার পাশে এসে বসলো, বলল,” একটা কথা বলবো ভাইয়া’
আমি বললাম ‘না”
বাইরে চলে আসলাম। সিগাড়েট খেলাম। কিছুক্ষন গান শুনলাম।, তারপর আবার গেলাম । দেখলাম মা ও সেই মহিলা জেগে গিয়েছে। মা নামাজ পড়ছে আর ঐ মহিলা রোগিকে বাতাস করছে। মহিলা আমার দিকে একটু তাকালো, হেসে।
আমি মুখ ঘুরয়ে নিলাম। এই প্রথম বার মেয়েটার দিকে তাকালাম। মেয়েটা দেখতে অদ্ভুদ সুন্দরি। টানা টানা চোখ। ঘন কালো চুল। খুব সুন্দর। আজ সন্ধায় পরিচয়। এর আগে কোনোদিনো দেখা বা কথা হয়নি। মেয়েটা আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।
......
রাত ৪ টা,
রোগি অর্থাত আমার বাবার প্রচুর কষ্ট হচ্ছে। দেখে আমার মা কান্নাকাটি করছে। মেয়েটা আমার হাত শক্ত করে ধরে কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছে আর কাদছে। আমার খুব খারাপ লাগছে। বাবা ইশারায় আমাদের ডাকলো। আমি গিয়ে পাশে বসলাম। মেয়েটা ঝাপিয়ে পড়লো। বাবা আমাকে মেয়েটাকে দেখিয়ে বলল ‘ একে চেন তুমি”
আমি মাথা নারালাম
বাবা বলো “ ওর দিকে খেয়াল রেখো’\
তারপর বাবা আমার মার হাতটা নিয়ে মহিলা মানে এই মেয়েটার মার হাতের সাথে মিলিয়ে দিলেন। আর শুরু হলো কান্নাকাটি। আমি বাইরে চলে আসলাম। বারান্দায় দাঁড়িয়ে সিগাড়েট ধরালাম। চোখ ফেটে পানি পরছে। পুরোনো কিছু কথা খুব মনে পড়ছে। বাবা একদিন আমার মাকে বলল, আমি কিছুদিনের জন্য বাইরে যাবো ফিরতে ১ মাস লাগবে। মা কোনো কথা বললেন না। বাবা চলে গেলে মা খুব কান্নাকাটি করলো। আমাকে বললো তোর বাপ আবার ওই খানকিটার কাছে গেসে।
উহ্‌, কি জ্বালা। সিগাড়েটেও কাজ হচ্ছেনা।

আর একটা কথা বার বার মনে পড়ছে।
একদিন আমি খাচ্ছিলাম। বাবা এসে বললো, বাবু একটু কথা বলোতো, ফোন এগিয়ে দিল।
আমি জানতে চাইলাম যে এ্টা কে?
বাব বললো তোমার ছোট বোন।
আমি তখন প্রচুর রেগে গেলাম। রেগে খাবার ফেলে দিলাম। বললাম আমার একটা বাবা, একটা মা, আর আমি তাদের এক ছেলে। আমার কোনো বোন নেই। বাবা সেদিন প্রচুর কেদে ছিল।
এসব কি খারাপ চিন্তা করছি।
............।
ভাইয়া,ভাইয়া বলে ডাকছে আমাকে। আমি দৌড়ে গেলাম। গিয়ে দেখি সবাই প্রচন্ড চিৎকার করছে। মেয়েটা ঝাপটা ঝাপ্টি করছে। বাবা রক্ত বমি করে দিল। আমি নার্স ডেকে নিয়ে আসলাম। এসে দেখি বাবা চোখ মেলে আছে। নিশ্বাস বন্ধ।
নার্স অক্সিজেন নাকে ঢুকালো। কোনো রেস্পন্সড পাওয়া গেলো না।
আবার শুরু হলো কান্না। আমিও বাদ গেলাম না। আমার মা আর ওই মহিলা জড়িয়ে ধরে কাদছে। মেয়েটা চিৎকার করে বলছে ‘ আমার কি হবে , আমারতো কিছুই রইলো না।
আমি বললাম ‘আমি আছিনা’। ও আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমার সৎ বোন। না আপন বোন। একই রক্তে বানানো।

1 টি মন্তব্য:

  1. সাকিব নূর আশরাফ৪ আগস্ট, ২০১১ এ ১১:৫৪ AM

    JD ভাই - অসাধারন লাগল । আমার পরীক্ষা চলে । তাই আপাতত bookmark করে রাখলাম সাইটটা । পরে সময় করে পড়ব ।

    উত্তরমুছুন